ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সমাবেশ চলছে। এ বিক্ষোভকে কেন্দ্রে করে গতকাল সোমবার কিছু দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন শহরে বাটা, কেএফসিসহ বিভিন্ন দোকান, রেস্তোরাঁয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এখানেই থেমে নেই, দেশের বিভিন্ন দোকান ও চেইন সুপারশপগুলোতে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি না করা এবং না রাখতে বলছেন কেউ কেউ।
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বেশ কিছু দোকান ও সুপারশপে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি ও না রাখার জন্য এক ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যদি কোনো দোকান বা সুপারশপ ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করে তবে সেগুলো ভাঙচুরেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দোকানে দোকানে গিয়ে তারা বেশকিছু পণ্যের ছবিসহ লিফলেট দিচ্ছেন। যদিও পণ্যগুলো আসলেই ইসরায়েলি কি না সেটা নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। বাটাসহ দু-একটি কোম্পানি এরই মধ্যে তাদের নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। প্রকৃত তথ্য না জেনে এ ধরনের তালিকা না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন কেউ কেউ।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত এক সুপারশপের ম্যানেজার জাগো নিউজকে বলেন, আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কিছু টিনএজ ছেলে এসে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করতে নিষেধ করে গেছেন। শপে যত ইসরায়েলি পণ্য আছে সবগুলো যেন এই সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে নেই, নয়তো তারা আমাদের আউটলেট চালাইতে দেবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর কয়েকটি দোকানে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে। অনেক দোকানি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পুলিশকে জানাতে চাচ্ছেন না। যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সে তালিকা ধরে অনেক দোকানি ও সুপারশপ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সেসব পণ্য সরিয়ে ফেলেছেন।
বাটা জানায়, বাটা গ্লোবালি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। যার মূল সূচনা হয়েছিল চেক রিপাবলিকে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। তবুও আমার বিভাগের সব ওসিদের ডেকেছি। তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। যাতে করে কেউ বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর-লুটপাত কিংবা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না করতে পারে।
ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের নামে বাটাসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অফিস-দোকান ভাঙচুর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সারাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে সারাদেশে এর সঙ্গে জড়িত ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন